কেন নন মাস্কিং এসএমএস ব্যবহার করবেন ?

বর্তমান সময়ে আধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্নভাবে মার্কেটিং বা প্রচারণা করা হয়। এর মধ্যে অন্যতম একটি মাধ্যম হলো নন মাস্কিং এসএমএস। আপনারা হয়ত কখনো খেয়াল করে থাকবেন বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান থেকে মোবাইলে বিভিন্ন ধরনের অফার এর মেসেজ আসে। 

 

যদি আমরা ধারনা করি যে প্রতিষ্ঠানটি বিকাশ, তবে এর গ্রাহক সংখ্যা প্রায় সাত কোটি। এই সাত কোটি গ্রাহককে এক এক করে এসএমএস পাঠানো যেমন অনেক সময়ের ব্যাপার তেমনি অনেক ব্যয়বহুল ও বটে। তাই এসব কাজে বাল্ক এসএমএস সার্ভিস ব্যবহার করা হয়, যার মাধ্যমে একইসাথে বা অল্প কিছু সময়ের মধ্যে সাত কোটি মানুষকে এসএমএস পাঠানো সম্ভব এবং খরচ তুলনামূলক অনেক কম। এই বাল্ক এসএমএস মূলত দুই ধরনের হয়ে থাকে। 

(১) মাস্কিং এসএমএস এবং

(২) নন-মাস্কিং এসএমএস

 

যদি আপনার মোবাইলে প্রবেশ করা এসএমএস টির কোনো নির্দিষ্ট সেন্ডার আইডি বা নম্বর দৃশ্যমান হয় (যেমনঃ +880174123020 বা +8801741005000 বা +880666330900 এভাবে), তবে এই ধরনের এসএমএস কে নন-মাস্কিং এসএমএস বলা হয়। অপরদিকে, যদি এসএমএস টির কোনো সেন্ডার নম্বর বা আইডি দৃশ্যমান না হয়ে কোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বা ব্র্যান্ড এর নাম থাকে (যেমন – GP offer, BL offer) তখন তাকে মাস্কিং এসএমএস বলা হয়। 

কেন নন মাস্কিং এসএমএস ব্যবহার করবেন ?

 

নন-মাস্কিং এসএমএস কিনতে পারেন যদি আপনি নিম্নলিখিত কারণগুলির মধ্যে কোনটির সাথে সম্পর্কিত হনঃ

  • প্রথমত, যদি আপনি ছোট পরিসরে ব্যবসা পরিচালনা করেন এবং প্রায় ১০০০ জনকে এসএমএস পাঠাতে চান এবং একইসাথে আপনার বাজেট কম। এক্ষেত্রে নন-মাস্কিং এসএমএস আপনার সময়, শ্রম এবং খরচ সবকিছুই কমাতে সক্ষম।
  • দ্বিতীয়ত, আপনি আপনার গ্রাহকের রিপ্লাই পেতে চান বা তার মতামত জানতে চান। এক্ষেত্রে নন-মাস্কিং এসএমএস আপনার জন্য শ্রেয়, কারণ মাস্কিং এসএমএস এ গ্রাহক আপনার এসএমএস শুধু দেখতে সক্ষম কিন্তু তার রিপ্লাই দিতে পারবে না।

 

নন মাস্কিং এসএমএস ব্যবহারের সুবিধা

আসুন সহজ ভাষায় নন-মাস্কিং এসএমএস এর সুবিধাসমূহ জেনে নিইঃ

  • স্বল্পমূল্যঃ এটি দামে সাশ্রয়ী এবং ন্যূনতম ১০০০ এসএমএস কিনতে পারবেন। এছাড়াও ১০০০ এর উপর আপনার প্যাকেজ যত বাড়বে তত মূল্যছাড় পাবেন। তবে এই মূল্যছাড় একটি নির্দিষ্ট সংখ্যা পর্যন্ত বাড়বে এরপর আর বাড়বে না।
  • গোপনীয়তা রক্ষাঃ যেহেতু এই এসএমএস র‌্যান্ডম নম্বর থেকে পাঠানো হয়, এতে করে আপনার গোপনীয়তা বজায় থাকে।
  • সহজে ব্যবহারযোগ্যঃ এর ইন্টারফেস অনেক সহজ হওয়ায় নতুনদের এটি ব্যবহার করে এসএমএস পাঠাতে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় না।
  • গ্রাহকের সাথে মত-বিনিময়ঃ এতে যেহেতু গ্রাহক আপনার এসএমএস এর রিপ্লাই করতে পারে, এভাবে আপনি গ্রাহকের কাছ থেকে তার মত গ্রহণের সুযোগ পান।

 

নন মাস্কিং এসএমএস ব্যবহারের চ্যালেন্জসমূহ

নন-মাস্কিং এসএমএস ব্যবহারের সময় কিছু চ্যালেন্জ বিবেচনায় আনতে হয় যা নিম্নরূপঃ

  • স্প্যাম এর ঝুঁকিঃ এটি র‍্যান্ডম নাম্বার থেকে পাঠানো হয়, যা আপনার ব্র্যান্ড নাম বা আইডেন্টিটি দেখাতে পারে না। এতে করে আপনার এসএমএস কে স্প্যাম হিসেবে গ্রহণ করা হতে পারে।
  • অনিশ্চিত মেসেজিংঃ এটি কোনো ডেলিভারি রিপোর্ট দেয় না, যা আপনাকে জানায় না যে আপনার এসএমএস কি সফলভাবে পৌঁছেছে কিনা।
  • কাস্টমাইজেশনে অসক্ষমতাঃ এটি কোনো কাস্টমাইজেশন বা সেগমেন্টেশন সম্ভব করে না, যা আপনাকে আপনার কাস্টমারকে তাদের পছন্দ অনুযায়ী এসএমএস পাঠাতে সুযোগ দেয়।

 

নন-মাস্কিং এসএমএস এর ভবিষ্যত

বর্তমান যুগে তথ্যপযুক্তি সম্পর্কিত যেকোনো কিছুর ভবিষ্যত নির্ভর করে বাজারের ডিমান্ড এবং প্রযুক্তির উন্নয়নের উপর। নন-মাস্কিং এসএমএস বেশ কিছু সুবিধা আছে উদাহরণস্বরূপ- দামে সাশ্রয়ী, গোপনীয়তা রক্ষা, সহজ ইন্টারফেস, রিপ্লাই সংগ্রহ ইত্যাদি। এই সুবিধাগুলি যাদের বাজেট কম এবং ছোট পরিসের ব্যবসা করেন তাদের জন্য আকর্ষণীয়। অন্যদিকে, নন-মাস্কিং এসএমএস এর কিছু চ্যালেন্জ হলো ব্র্যান্ড নাম বা আইডেন্টিটি দেখানো যায় না, ডেলিভারি রিপোর্ট দেয় না, কাস্টমাইজেশন বা সেগমেন্টেশন সম্ভব করে না ইত্যাদি। এই চ্যালেন্জগুলি যাদের ব্যবসা বড় এবং ব্র্যান্ড ভিত্তিক তাদের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। 

তাই আমি মনে করি যদি এটি আরও উন্নত হয় এবং কিছু নতুন ফিচার যুক্ত করা হয়, তাহলে এটি এখনো বাজারে টিকে থাকতে পারে। আপনি যদি নন-মাস্কিং এসএমএস কিনতে চান, তাহলে আপনি বাংলাদেশের কিছু সার্ভিস প্রোভাইডারের কাছ থেকে নিতে পারেন।

 

শেষ কথা

আমরা দেখতে পেলাম যে, নন-মাস্কিং এসএমএস আমাদের বাজেটের কথা মাথায় রেখে ছোটখাট ব্যবসা পরিচালনার জন্য একটি অন্যতম মাধ্যম তৈরি করে দিয়েছে যা গ্রাহক এবং সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি যোগসূত্র স্থাপন করেছে। 

 

যুগের এবং প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে যদি এর কাঠামোগত এবং আরও কিছু সুবিধা যোগ করা যায় তাহলে নন-মাস্কিং এসএমএস হতে পারে আগামী দিনের প্রচার জগতে গ্রাহক এবং সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের সম্পর্ক দৃঢ় করার কুশল কারিগর।